দলের

বুধবার, ৪ জানুয়ারী, ২০১২

শ্রীবরদীর ছেলে সিনিয়র সহকারী কমিশনার (ডিবি) মোঃ শহিদুল্লাহ পিপিএম সেবা পদক পাওয়ায় শ্রীবরদীতে খুশির জোয়ার


শ্রীবরদী নিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকম
শেরপুর জেলার সীমান্তবর্তী শ্রীবরদী উপজেলার কৃতি সন্তান ডিবির সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার মোঃ শহীদুল্লাহ রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদক পুরস্কার পাওয়ায় শ্রীবরদীতে খুশির জোয়ার বইছে। পুলিশ বাহিনীতে অসাধারন কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের জন্য গত ৩ জানুয়ারী পুলিশ সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে এ পদক পরিয়ে দেন। তিনি বর্তমানে ডিএমপি ঢাকা দক্ষিণ জোনের ডিবির সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার হিসাবে কর্মরত আছেন।
বাংলাদেশ পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ২০১০ সালের ১২ ডিসেম্বর নিখোঁজ হন রমনা থানা জামে মসজিদের ইমাম। ১১ দিন পর ৩১ ডিসেম্বর হাত-পা বাধা ও মুখে স্কচটেপ পেচানো অবস্থায় শেওড়াপাড়ার একটি এ্যাপার্টমেন্ট থেকে উদ্ধার করা হয় ইমামের মৃতদেহ। ডিএমপির দক্ষিণ জোনের ডিবির সিনিয়র সহকারী কমিশনার মোঃ শহীদুল্লাহ চাঞ্চল্যকর এ মামলার রহস্য উদঘাটনের কাজ শুরু করেন। কোন ক্লু নেই, স্বাক্ষী নেই, এমনকি ভিকটিমের পরিবারের সদস্যদের কারো ব্যাপারে সন্দেহ নেই। এমন একটি চাঞ্চল্যকর ঘটনা আধুনিক প্রযুক্তি জ্ঞান ব্যবহার ও গোয়েন্দা তৎপরতায় মাধ্যমে অল্প সময়ের মধ্যে শনাক্ত করে তিনি হত্যাকারী কাজী বায়েজিদকে গ্রেপ্তার করেন। গ্রেফতারকৃত আসামি কাজী বায়েজিদ স্বেচ্ছায় দোষ স্বীকার করে সব ঘটনা প্রকাশ করে। অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে এ মামলার রহস্য উদঘাটন করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে আসামি গ্রেফতার করে আইনের কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর ফলে জনমনে স্বস্তি নেমে আসে এ মালায় ৪ জনের ফাসি ও ১ জনের যাবজ্জীবন হয়।। এছাড়া বহুল আলোচিত গুলশান থানাধীন কালাচাঁদপুরের বাসিন্দা সাদিকুর রহমান ও তার মেয়েকে রুবেল নামক বখাটের নিকট বিয়ে দিতে রাজি না হওয়ায় রুবেল ও তার সহযোগী মিঠুন সাদিকুর রহমান ও তাঁর স্ত্রী কে গুলি করে হত্যা করে। এ হত্যা মামলায় তাদের ফাঁসির আদেশ হলে দন্ডপ্রাপ্ত আসামিরা জামিন জালিয়াতচক্রের সহায়তায় জামিনে মুক্তিপায়। এ জামিন জালিয়াতির ঘটনায় ভিকটিমের মেয়ে বাদী হয়ে মামলা দায়ের করলে মোঃ শহিদুল্লাহ মাত্র ৩ দিনের মধ্যে প্রধান আসামি এ্যাড. মনিরুজ্জামান, প্রতারকচক্রের অপর আসামি ভূয়া এ্যাড. ফারুক আহমেদ ও সহযোগি আসামি মহিউদ্দিন আজাদ রাব্বিকে গ্রেফতার করে এবং তাদের কাছ থেকে ২ টি অলিম্পিয়া টাইপ মেশিন, বিভিন্ন কোর্টের ও অফিসের ৩৬ টি সিল, লেখাবিহীন অনুলিপি স্ট্যাম্প, ওকালতনামাসহ আরো বিভিন্ন প্রকারের আলামত উদ্ধার করেন। প্রধান ২ আসামী বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। এ ঘটনার রহস্য উদঘাটিত হলে তা মিডিয়ার মাধ্যমে সারা দেশে ব্যাপক আলোচিত হয় এবং পুলিশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়। এছাড়াও মোঃ শহিদুল্লাহ বিভিন্ন সময় পেশাদারিত্ব, বুদ্ধিমত্তা ও সাহসিকতা নিয়ে বিভিন্ন হত্যা, ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের মামলার রহস্য উদঘাটন, আসামি গ্রেফতার ও মালামাল উদ্ধার করে জনসম্মুখে পুলিশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে অসাধারন অবদান রেখেছেন। এই অসাধারন অবদানের জন্য সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার মোঃ শহিদুল্লাহকে রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদক (পিপিএম) সেবা প্রদান করা হয়। এ কৃতি সন্তান শেরপুর জেলার সীমান্তবর্তী শ্রীবরদী উপজেলার তাতিহাটি ইউনিয়নে মধ্য ছনকান্দা গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। তার পিতা মরহুম মোশারফ হোসেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছিলেন। মা রাবেজা বেগম একজন গৃহিনী। ৩ ভাইয়ের মধ্যে তিনি সবার ছোট। বড় ২ ভাইয়ের মধ্যে আমান উল্লাহ হেলাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং আসাদুল্লাহ (বিল্লাল) কলেজের ইংরেজী প্রভাষক। তিনি ২০০৫ সালে সহকারী পুলিশ সুপার হিসাবে বাংলাদেশ পুলিশে যোগদান করেন।

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন