দলের

সোমবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০১১

শ্রীবরদীতে বিজয় দিবস প্রস্তুতি সভা

মোঃ কামরুজ্জামান আবু
মহান বিজয় দিবস উৎযাপন উপলক্ষে প্রস্তুতি সভা গতকাল সোমবার শ্রীবরদী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার গুলশান আরার সভাপতিত্বে প্রস্তুতি সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন উপজেলা চেয়ারম্যান খোরশেদ আলম। বক্তব্য রাখেন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আলহাজ্ব আমিনুল ইসলাম. বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল্লাহ ছালেহ, যুবলীগ নেতা আলমগীর হোসেন প্রমুখ। বিজয়ের ৪০ বছর পূর্তি উপলক্ষে এবার বিজয় দিবস জাকজমক ভাবে পালনের সীদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের প্রধান, ব্যবসায়ী, রাজনৈতিক ও সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
মোঃ কামরুজ্জামান আবু
এই দিনে শ্রীবরদীতে উড়ে স্বাধীন বাংলার পতাকা
৬ ডিসেম্বর। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাক হানাদার বাহিনী পলায়ন করে । শ্রীবরদীতে উত্তোলন করা হয় স্বাধীন বাংলার লাল সবুজের পতাকা। মুক্ত হয় শ্রীবরদী উপজেলা।
জানা গেছে  ১৯৭১ এ মুক্তিযুদ্ধে এই অঞ্চলে কর্ণেল আবু তাহেরের অধীনে ১১নং সেক্টরের যুদ্ধ পরিচালিত হয়। ১১নং সেক্টরের সদর দপ্তর ছিল ভারতের মহেন্দ্রগঞ্জে । ১১নং সেক্টরকে ৮টি সাবসেক্টরে বিভক্ত করা ছিল। সাবসেক্টর গুলো হচ্ছে,  মহেন্দ্রগঞ্জ, মানকারচর,  পুরাকাশিয়া,  ডালু , বাগমারা , শিববাড়ী , রংড়া, ও মহেশখোলা। বর্তমান শ্রীবরদীর একাংশ মহেন্দ্রগঞ্জ ও অপর অংশ পুরাখাসিয়া সাব সেক্টরের অধিনে ছিল।  ১১নং সেক্টরে নিয়মিত বাহিনীর ৩ হাজার ও ১৯ হাজার গনবাহিনীসহ মোট মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন ২২ হাজার। ১২ জুন থেকে ২৮ নভেন্বর পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে পাকসেনাদের  বিভিন্ন সময়ে সম্মুখ যুদ্ধে ক্যাপ্টেন সালাউদ্দিনসহ মোট ১৯৪ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হয়েছেন। নিহত হয়েছেন ৪৯৭ জন পাকসেনা। বিরত্বপূর্ণ সমর সাফল্যের জন্য শুধু শ্রীবরদী থানার ৩ জন বীরত্বের খেতাব লাভ করেন। এদের মধ্যে শহীদ মুস্তাছিন বিল্লাহ খুররম বীর বিক্রম, কমান্ডার জহুরুল হক মুন্সী বীর প্রতিক (বার) ও ডাঃ আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বীর প্রতিক। বর্তমান শ্রীবরদী অংশের ভায়াডাঙ্গা ও কুরুয়ায় পাক বাহিনীর ২টি ক্যাম্প ছিল। তা সত্বেও এ থানার অধিকাংশ এলাকা প্রায় ৯ মাস ধরেই মুক্ত অঞ্চল ছিল। ভারতের সীমান্তে এ অঞ্চলটির অবস্থান হওয়ায় মুক্তিযোদ্ধারা অবাধে শ্রীবরদীর কর্ণঝোড়া এলাকায় অবস্থান করে ও চোরাগোপ্তা হামলা চালায় । ৪ ডিসেম্বর ধানুয়া কামালপুর মুক্ত হলে এ এলাকা থেকে পাক হানাদার ও তাদের ধুসররা পশ্চাৎপসারন করতে থাকে। এরি মধ্যে ওই দিনই সবচেয়ে বীরত্বপূর্ণ অভিযানটি পরিচালিত হয় শ্রীবরদী বকসীগঞ্জ সড়কের টিকরকান্দি নামক স্থানে। ওই দিন সকাল ১১ টায় ৩১ ব্যালুচ কমান্ডিং অফিসার মেজর আইয়ুব বকসীগঞ্জ থেকে শেরপুর আসছিলেন। কিন্তু সকাল ১১ টায় কমান্ডার জহুরুল হক মুন্সী বীর প্রতিক বার ও মুক্তিযোদ্ধা ফকির রাজ্জাক সড়কে ১০ টি এন্টি ট্র্যাংক পুতে রাখে। এ যুদ্ধে মেজর আইয়ুব সহ ১৩ জন পাক সেনা নিহত হলে ভয়ে এ অঞ্চলের পাক বাহিনী এলাকা ছেড়ে চলে যায়। মূলত ৪ তারিখ থেকেই শ্রীবরদী থানা মুক্ত হয়ে যায়। পরবর্তীতে ৬ ডিসেম্বর কমান্ডার জহুরুল হক মুন্সী স্থানীয়দের সহায়তায় শ্রীবরদী সিও অফিস ও প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি অফিসে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। মুক্ত হয় শ্রীবরদী।

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন